প্রকাশিত: Mon, Jul 1, 2024 3:25 PM
আপডেট: Mon, Apr 28, 2025 3:40 PM

কতো দেশ, কতোবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না!

সাইফুদ্দিন আহমেদ নান্নু : সুনীল গাভাস্কার, বিষেন সিং বেদী, অংশুমান গাইকোয়াড, চন্দ্রশেখর, আসিফ ইকবাল, জহির আব্বাস, মাজেদ খান, রিচার্ড, ক্লাইভ লয়েড, গর্ডন গিনিস, ডেনিস লিলি, থমসন ভারত, পাকিস্তান, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়ার এই কজন ক্রিকেটারের নাম এখনও মনে আছে যাঁদের টেস্ট ম্যাচের ধারা বিবরণী বড় ভাইদের সাথে রেডিওতে শুনতে পারাটাই  ছিল অনেক বড় ঘটনা। সেই ধারাবিবরণী হতো হিন্দি, উর্দুÑ নয়তো ইংরেজিতে। রেডিওর এরিয়াল তুলে, এরিয়ালের সাথে তার বেঁধে,  নিখুঁত কায়দায় নব ঘুরিয়ে রিলেস্টেশন ধরা হতো। কখনও স্পষ্ট, কখনও ক্ষীণতর, ঝিরঝির শব্দের সেই ধারাবিবরণী শোনার জন্য রেডিওর চারপাশে গোল হয়ে বসতো সবাই। পাড়ার বড় ভাইয়েরা খেলার ধারাবর্ণনা শোনার পাশাপাশি বিশেষজ্ঞের মতো ম্যাচের পরিস্থিতি নিয়ে নানা বিশ্লেষণ, বিতর্ক করতেন।

শৈশবের সেই খেলা শোনার সেই নেশা বিকেল হলেই টেনে নিয়ে যেতো মাঠে। বাঁশের বাতার স্ট্যাম্প, কেরোসিন কাঠের ব্যাট আর  পাইওনিয়ার ব্যান্ডের টেনিস বলে আমরা মনে মনে কেউ গাভাস্কার, কেউ আসিফ ইকবাল, কেউ গর্ডন গিনিজ, ক্লাইভ লয়েড বনে যেতাম। কৈশর, যৌবনের সত্যিকারের ক্রিকেট ব্যাট-বল, প্যাড, গ্লাভস পরে স্থানীয় ক্রিকেট লীগে খেলা শুরু করলাম। একসময় খেলোয়াড়ী জীবন থেকে নিঃশব্দে অবসর নিলাম (অবসর না বলে বাদ পরা বলাই ভালো)। তারপর লীগ, টুর্নামেন্টে আম্পায়ারিং চললো বেশ কবছর। আম্পায়ার হিসেবে খেলোয়াড়দের শ্রদ্ধাও পেয়েছি যথেষ্ট। শৈশব থেকে ৬২ পেরুনো এই লম্বা জীবনে নিজদেশের, অন্য দেশের অসংখ্য খেলা টিভির পর্দায় নেশাগ্রস্তের মতো দেখেছি। আমাদের দেশ যখন ওয়ানডে, টেস্ট ম্যাচ খেলার যোগ্যতা অর্জন করলো, একাধিক বিশ্বকাপে অংশ নিলো তখন অসম্ভব মেনেও স্বপ্ন দেখতাম একদিন আমাদের দেশও ওয়ার্ল্ডকাপ জিতবে। সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেলো। কত দেশ, কতবার কাপ জিতলো, আমাদের ঘরে আর কাপ এলো না। হাতে খরচ করার মতন যে জীবনটুকু অবশিষ্ট আছে তা দিয়ে বিশ্বকাপ জেতার আনন্দে মেতে উঠার সৌভাগ্য হবে না বলে দুঃখটা রয়েই গেলো। আমাদের টাইগাররা হয়তো একদিন বিশ্বকাপ  জিতবে। সারাদেশ আনন্দের, রঙের, গানের উৎসবে মাতবে, আমরা সেই উৎসবে থাকবো না এমনটা ভাবতেই কষ্টর কৃষ্ণপাথরটা বুকে চেপে বসে। টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ী টিমইন্ডিয়াকে অভিনন্দন। ৩০-৬-২০২৪। ফেসবুক থেকে